গ্লোবাল ডেস্কঃ- রাজধানীর লালমাটিয়ায় শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) রাতে এফ ব্লকের ৪/২ ভবনের কেয়ারটেকার আনোয়ার আহমেদ শিকদারের ছেলে সুমনকে মোহাম্মদপুরের রায়েরবাজার এলাকায় দুর্বৃত্তরা এলোপাতাড়ি কুপিয়ে নিহত করে। ‘সারাদিন লালমাটিয়া মহিলা কলেজ কেন্দ্রে নৌকা আর ঠেলাগাড়ির জন্য কাজ করেছে।বিকেলে বাসায় আইসা নাস্তা খাইয়া গেছে আড্ডা দিতে। আড্ডা থেকে আর ফেরা হলনা তার’।
নিহত সুমন শিকদারের (২৪) মা ঝুমুর বেগম কাঁদতে কাঁদতে কথাগুলো বলেন। ছেলে হত্যার বিচার চান তিনি।
স্থানীয়রা জানান, নিহত সুমন ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের নবনির্বাচিত কাউন্সিলর সৈয়দ হাসান নূর ইসলামের লালমাটিয়া মহিলা কলেজ কেন্দ্রের পোলিং এজেন্ট ছিলেন। সুমন শিকদারের বাবা আনোয়ার আহমেদ শিকদার লালমাটিয়ার এফ ব্লকের ৪/২ ভবনের কেয়ারটেকার। তাদের গ্রামের বাড়ি লক্ষ্মীপুর জেলার রামগতিতে।
মায়ের কান্নায় স্তব্ধ হয়ে উঠে এলাকার পরিবেশ :
মা ঝুমুর বেগম বলেন, আমার ছেলেটার কী দোষ ছিল? সারাদিন লালমাটিয়া মহিলা কলেজ কেন্দ্রে নৌকা আর ঠেলাগাড়ির জন্য কাজ করেছে। বিকেলে বাসায় আইসা নাস্তা খাইয়া গেছে আড্ডা দিতে। সুস্থ-সবল ছেলেকে আমি আর বুকে ফিরে পাই নাই, পাবও না। হারলেও ওরা, জিতলেও ওরা। কিন্তু বুক খালি করল আমার। আমি এ হত্যার বিচার চাই।
আল্লাহ তুমি বিচার করো, কারা এমন করে আমার ছেলেডারে খুন করল। আমার বুকটা ফাঁকা করল। আমি এখন কেমনে বাঁচুম!’ আমার ছেলের মতো আর ছেলে হয় না। এ মহল্লায় সবাই ওরে চেনে-জানে। আমার মতো আর কোনো মায়ের বুক যেন কখনও খালি না হয়।
যেভাবে খুন হন সুমন :
নিহত সুমনের বন্ধু সাজ্জাদ, সুমন, রুবেল, আল-আমিন, ইমরান (মেসি) ও ইমরানসহ ছয়জন মোহাম্মদপুরের রায়েরবাজারের রহিম বেপারি ঘাটে দাঁড়িয়ে কথা বলছিল। হঠাৎ অর্ধশত যুবক এসে এলোপাতাড়ি সুমনকে কোপাতে থাকে। এতে সুমনকে আহত অবস্থায় শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
সুমনের বুকের ডান পাশে ধারাল অস্ত্রের আঘাতে তার মৃত্যু হয়।এছাড়া তার পেট, পা ও পিঠসহ শরীরে বেশ কয়েকটি জায়গায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. প্রবাহ বিশ্বাস জানিয়েছেন।
পুলিশ খুঁজছে সুমনের খুনিদের :
মোহাম্মাদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল লতিফ জানান, সুমন হত্যায় জড়িতদের শনাক্তে ঘটনাস্থলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এখনও মামলা নথিভুক্ত হয়নি। নিহতের বাবাকে থানায় আসতে বলা হয়েছে। তিনি বাদী হয়ে মামলা দায়ের করবেন। এ ঘটনায় যে বা যারাই জড়িত থাকুক না কেন তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সুমনের মায়ের কান্না আহাজারিতে স্তব্ধ হয়ে গেছে পুরো রাজধানীর লালমাটিয়া এফ ব্লকের পুরো এলাকা।
....সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করুন
সংবাদটি পড়া হয়েছে :174 বার!